কিভাবে একজন সফল উদ্যোক্তা হতে পারবেন

কিভাবে একজন সফল উদ্যোক্তা হতে পারবেন


Posted on: 2021-05-06 17:17:02 | Posted by: eibbuy.com
কিভাবে একজন সফল উদ্যোক্তা হতে পারবেন

উদ্যোক্তা অনেকেই হয়ে থাকেন কিন্তু সফল উদ্যোক্তা হতে পারে খুব কম ব্যাক্তি। কারন সফল উদ্যোক্তা হতে লাগে বিশেষ ধরনের কৌশল। প্রত্যেক সফল উদ্যোক্তার আছে নিজস্ব কিছু কৌশল জা দিয়ে সে সফল উদ্যোক্তা হতে পেরেছেন। একজন সফল উদ্যোক্তা হিসাবে আপনি ব্যবসা শুরু করতে চান কিন্তু বুঝতে পারছেন না যে কিভাবে কোথা থেকে সফল উদ্যোক্তা হিসাবে ব্যবসা শুরু করবেন, চিন্তার কোনও কারণ নেই। আজকের পোস্টে আমি দেখাবো কিভাবে একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়া যাবে।  

বর্তমান আমাদের দেশে অর্থনৈতিক বাস্তবতা এমন যে অধিকাংশ মানুষ তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি  খুজে পায়না। আবার অনেকেই চাকরি খুঁজে পেলেও সেটা তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে করতে হয়। ফলে এসব মানুষ চান যে কারও অধীনে কাজ করার চেয়ে সফল উদ্যোক্তা হয়ে নিজেরাই নিজেদের পছন্দমত ব্যবসা করে নিজেদের ভাগ্য গড়বেন।  কারণ একজন সফল উদ্যোক্তা যখন এ ধরনের ব্যবসা শুরু করেন তখন সেখানে তার ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা এবং জীবনের লক্ষ্যে প্রতিফলিত হয়।  


একজন ব্যাক্তি সফল উদ্যোক্তা হওয়ার প্রধান শর্ত হচ্ছে নিজের আত্মবিশ্বাস, মানসিক ভাবে স্থিতিশীল, নিরলস প্রচেষ্টা, একটি নির্দিষ্ট লক্ষ নিয়ে কাজ শুরু করা। তবে একজন ব্যাক্তি সফল উদ্যোক্তা হওয়ার বিশেষ কোনও মুহূর্ত নেই, নেই কোন কাল। সে যে কোন সময় শুরু করে সফল উদ্যোক্তা হতে পারবেন।  সফল উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য আছে নানা কৌশল আছে। আজকে সফল উদ্যোক্তা  হবার জন্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কৌশল বর্ণনা করবো । জা আপনাদের সফল উদ্যোক্তা হতে সাহায্য করবে। 


১. আপনার বর্তমান অবস্থান নিয়ে আপনি সন্তুষ্ট কিনা যাচাই করুন।   
একজন সফল উদ্যোক্তা হতে হলে আপনাকে সবকিছু ত্যাগ করে আপনার কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের পিছনে ছুটতে হবে। এজন্য আপনাকে আপনার বর্তমান অবস্থা দেখতে হবে । আপনি যদি আপনার বর্তমান অবস্থা নিয়ে অসন্তুষ্ট থাকেন, তাহলে নতুন কোন উদ্যোগ শুরু করার আগে সেটা চিন্তা ভাবনা করে নিবেন । কারন অনেকেই ভালো অবস্থান রেখে সফল উদ্যোক্তা হবার আসায় নতুন উদ্যোগ শুরু করে । ফলে তার বর্তমান চাহিদা আর উদ্যোগ থেকে আয়ের সামাঞ্জস্যতা থাকেনা। এজন্য সে পারেনা সফল উদ্যোক্তা হতে।  ফলে সে তার ব্যথতার দায় চাপায় দেশের অর্থনীতি, বন্ধু-বান্ধব বা পরিবার-পরিজনদের উপর । কিন্তু তাদের উপর দোষ নিয়ে কোনও লাভ হয়না। কারন সফল উদ্যোক্তা হতে নতুন উদ্যোগের সিদ্ধান্ত নেবার আগেই  তাকে তার বর্তমান অবস্থান নিয়ে চিন্তা করা দরকার ছিলো । সুতরং, আপনি যদি সফল উদ্যোক্তা হতে চান তবে উদ্যোক্তা হবার আগেই ভাবুন শুরু করবেন কিনা। শুরু করলে চালিয়ে যেতে পারবেন কিনা ?

২. সঠিক ব্যবসা নির্বাচন করা।
একজন সফল উদ্যোক্তা হতে হলে অবশ্যই আপনাকে সঠিক ব্যবসা নির্বাচন করতে হবে। আপনাকে প্রচুর খুজতে হবে । ব্যবসা নিয়ে প্রচুর পড়াশুনা করতে হবে। এবার নিজের চরিত্রের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানুন। একজন সফল উদ্যোক্তা  হবার আগে জানতে হবে আপনার নিজের আবেগ, অনুভুতি, কর্মদক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং সামাজিক ব্যবস্থা, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা সম্পর্কে।  সফল উদ্যোক্তা হবার আগে নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, কোন কাজটা আপনাকে কর্মশক্তি এবং করমস্প্রিহা দান করে যখন আপনি ক্লান্ত থাকেন। এমন একটা ব্যবসা নির্বাচন করুন যে ব্যবসাটা আপনার ভালো লাগবে ভালোবাসবেন। একজন সফল উদ্যোক্তা  তার কাজকে ভালোবেসে করতে হবে।  বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন বলেন, সফল উদ্যোক্তা  ওই কাজটিকেই বেছে নেন যে কাজটি করলে তার কাছে সেটা খেলা মনে হয় এবং কাজ করতে তার কাছে সময়ের কোন হিসাব থাকেনা। একজন সফল উদ্যোক্তার জন্য কোন ব্যবসা উপযুক্ত হবে টা বোঝার কয়েকটি উপায় আছে ।

প্রথমেই আপনি যা জানেন তাই কাজে লাগাতে হবে। যেমন আপনি মানুষকে রান্না করে খাওয়াতে ভালবাসেন । অতীতে নিজের জন্য বা অন্য মানুষের আপনি অনেক কিছু রান্না করেছেন, আর তারা খেয়ে বাহবা দিয়েছে। এবার চিন্তা করুন আপনার এই রান্না করার গুনকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে ব্যবসা শুরু করা যায় । আপানর কোন কোন রান্না অন্যদের কাছে ভালো লাগে , সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন। অন্য মানুষের চাহিদা সম্পর্কে জানুন। গতানুগতিক ব্যবসাই নয়, প্রত্যেকটি পণ্যের বাজারেই নতুন কিছু না কিছু যোগ করা সম্ভব। সেই ফাঁকটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। তাছাড়া চিন্তা করুন কিভাবে নতুন কোনও আইডিয়া তৈরি করা যায়। অনলাইনে অফলাইনে প্রচুর খুজুন । নিজেকে শিক্ষার্থী হিসেবে চিন্তা করুন নতুন নতুন কিছু শিখার চেষ্টা করুন।

৩. সঠিক পরিকল্পনা তৈরি করা ।
সফল উদ্যোক্তা হবার জন্যে আপানর দরকার সঠিক পরিকল্পনা। অধিকাংশ উদ্যোক্তাদের ব্যর্থতার কারণ হচ্ছে তার উদ্যোগের পরিপূর্ণ পরিকল্পনার অভাব। একজন সফল উদ্যোক্তা হিসাবে উদ্যোগ শুরু করার আগে একটি পরিকল্পনা দাড় করাতে হবে । এই পরিকল্পনা আপনাকে আপনার ব্যবসা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দিবে এবং আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। পরিকল্পনাটি একটি খাতায় লিখুন। আপনার ব্যবসার উদ্দেশ্য, ব্যবসায়িক কৌশল এবং ভবিষ্যৎ পদক্ষেপগুলো এই পরিকল্পনায় লিখে রাখবেন। আপনার এই ব্যবসায়িক পরিকল্পনাটি ১ পেজের বেশি হওয়ার প্রয়োজন নেই।
এইকজন সফল উদ্যোক্তা হিসাবে আপনার পরিকল্পনায় নিম্নোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর থাকবে । যেমন আপনি কি পণ্য বা সেবা তৈরী করবেন? আপনার পণ্যের ভোক্তা কারা ? ক্রেতাকে কি ধরনের ব্যবসায়িক প্রতিশ্রুতি দিচ্চেন ? আপনার ব্যবসার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর উদ্দেশ্য, কৌশল এবং কর্ম পরিকল্পনা কি?
সফল উদ্যোক্তা হিসাবে আপনাকে এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে একটা কর্ম পরিকল্পনা করতে হবে। এর পর শুরু করতে হবে আপনার ব্যবসা।
 

৪. ক্রেতা নির্ধারণ করা
একজন সফল উদ্যোক্তা হবার জন্য ব্যবসায়ে টাকা কোন টাকা ইনভেস্ট করার আগে ক্রেতাদের চাহিদা নির্ণয় করার চেষ্টা করতে হবে। বাজারে অনেকেই আছেন যারা এসব পণ্য সেল করে থাকেন। আপনার উৎপাদিত পণ্য আদতেও তারা ক্রয় করবে কিনা তা খুঁতিয়ে দেখতে হবে। আপনার পণ্য বিক্রির বাজারের আয়তন আগে ঠিক করুন। আপনার পণ্য ক্রেতারা কেন ক্রয় করবে তা ঠিক করুন। কারন বাজারে অনেক সাপ্লায়ের আর সেলারা আছে। এবার বাজারের উপর প্রয়োজনীয় সমীক্ষা চালাতে হবে। এতে করে আপনি ক্রেতার মানসিকতা সম্পর্কে জানতে পারবেন। এবার সে অনুযায়ী আপনার পণ্যের বিজ্ঞাপন চালাতে হবে।

৫. অর্থায়নঃ
একজন সফল উদ্যোক্তা হতে হলে আপনার উদ্যোগের জন্য অর্থায়নের সঠিক ব্যবস্থা করতে হবে। প্রত্যেকটি সফল উদ্যোক্তার ব্যক্তিগত জীবন এবং ব্যবসা পরস্পর সংযুক্ত থাকে। ব্যবসা শুরুর আগে নিজের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থার বিস্তারিত বিবরণ তৈরি করুন এবং প্রত্যেকটি আয়-ব্যয়ের হিসাব রাখুন। আপনার ব্যবসায় বাইরের ইনভেস্ট জোগাড় করার আগে নিজের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে জানা খুবই জরুরী। কারন ব্যবসায় আপনাকে ভালো পরিমাণে ইনভেস্ট না করলে বাহির থেকে ইনভেস্ট পাওয়া খুব কঠিন হবে। সবাই চাইবে আপনার ইনভেস্ট কি রকম আছে। এর পর তারা ইনভেস্ট করতে আগ্রহী হবে। এজন্য আপনাকে অনাবশ্যক খরচ কমাতে হবে  আর প্রত্যেকটি টাকার উপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

৬. পণ্য সাপ্লায়ের নেটওয়ার্ক তৈরি করা ।
একজন সফল উদ্যোক্তা হতে হলে আপনাকে সঠিক পণ্য সাপ্লাই নিশ্চিত করতে হবে। কারন ক্রয় করতে আপনি যদি কম দামে ক্রয় করতে না পারেন তবে বিক্রি করে লাভ করতে পারবেন না  । এছাড়া আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ার অবদানে অনেক গ্রুপে আপনি যুক্ত থেকেও আপনার ব্যসবা বাড়াতে পারবেন। অনেকেই আছেন যারা সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে সংযুক্ত থেকে বিশাল ব্যবসা গড়ে তুলেছেন। আপনাকেও এভাবে যুক্ত হতে হবে। এখন করোনার কারনে অফলাইনের চেয়ে অনলাইনে ব্যবসা বেশী জমজমাট। 


৭. সেবার মানোন্নয়ন করতে হবে।
একজন সফল উদ্যোক্তা হতে চাইলে আপনার সেবার  মানোন্নয়নের উপর গুরুত্ব আরোপ করুন। আপনি যতো বেশি ভালো সেবা দিতে সক্ষম হবেন ততো বেশি আয় করতে পারবেন। কারন আজকাল মানুষ চায় পণ্যের সাথে বিক্রেতার ভালো ব্যবহার। এক্ষেত্রে আপনাকে কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। যেমন আপনি ক্রতাকে আরো কি ধরনের উন্নত সেবা দিতে পারেন? পণ্য ক্রয়ের সাথে সাথে আর কি সেবা দিয়ে ক্রেতাকে খুশী করতে পারেন? ক্রেতার অভিযোগের উপর ভিত্তি করে আপনার পণ্য বা সেবার আরো বেশী উন্নয়ন সম্ভব হবে কিনা ? এসব বিষয় নিয়ে কাজ করে একজন সফল উদ্যোক্তা হতে পারবেন।  

৮. প্রকাশ্যে শেয়ার করুনঃ
সফল উদ্যোক্তা হবার আরেকটি উপায় হলো আপনার ব্যবসাটি প্রকাশ্যে শেয়ার করতে হবে। সবাইকে জানাতে হবে যে আপনি এই ব্যবসাটি শুরু করেছেন। ব্যবসা মানে চুরি করা না । আপনি কি ধরনের মানুষ এবং আপনার পেশা কি?  সবার সাথে সে কথা কোন দ্বিধা ছাড়া প্রকাশ করুন।  মনে রাখতে হবে, সাফল্য ও ব্যর্থতা এই ২টি মিলেই ব্যবসা। প্রথমবার সফলতা নাও আসতে পারে, তাই বলে এই না যে কখনও সফলতা আসবেনা। বিখ্যাত লেখক ও প্রভাষক ন্যাপোলিয়ান হিল বলেছিলেন যে ৮০% উদ্যোক্তার ব্যর্থ হওয়ার কারণ হচ্ছে হার মেনে নেয়া।


সফল উদ্যোক্তা হতে হলে আপনাকে আরো কিছু গুনের অধিকারী হতে হবে।
একটি শিশু বার বার পরে যাওয়ার পরেই হাটতে শিখে। ব্যর্থতা থেকেই উপযুক্ত শিক্ষা পাওয়া যায়। তাই ব্যর্থতাকে সহজভাবে নিন। মনে রাখবেন, এই ব্যর্থতা অস্থায়ী। ধারাবাহিকভাবে আত্মনিয়োগের মাধ্যমে এই ব্যর্থতা অতিক্রম করা সম্ভব। এজন্য চাই মানসিক শক্তি ও ধৈর্য। পৃথিবীতে যারা উন্নতির চরম শিখরে অবস্থান করছেন, তাদের ওই অবস্থানের পিছনে রয়েছে হাজারো ব্যর্থতা এবং সেই ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন করে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা।


ব্যবসার মালিকানা আপনাকে স্বাধীনতা ও ক্ষমতায়ন প্রদান করতে পারে। একটি ব্যবসার মালিকানা উদ্যোক্তাদেরকে নিজেই সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা, সৃজনশীল দৃষ্টিভঙ্গি উপলব্দি ও অন্যান্য উদ্যোক্তাদের সাথে ভাল সম্পর্ক গঠনের সুযোগ প্রদান করে থাকে। তাছাড়া এক্ষেত্রে উদ্যোক্তারা গ্রাহক ও বিক্রেতাদের সাথে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক বিকাশেরও সুযোগ পেয়ে থাকেন। আর উদ্যোক্তা হিসেবে সফল হওয়ার জন্য কিছু বিশেষ গুণাবলী অর্জন করতে হয়। তাই আমরা আপনার জন্য কয়েকটি পরামর্শ নিয়ে এসেছি যাতে আপনি উদ্যোক্তা হিসেবে সফল হতে পারেন। নিচে তার বিবরণ দেওয়া হল।
 

দৃঢ় চরিত্রের অধিকারী হওয়া
অধ্যবসায়ই চরিত্রের দৃঢ়তা। আপনি যদি একজন সফল উদ্যেক্তা হতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই অনুকরনীয়, অধ্যাবসায়ী আর পরিশ্রমী ব্যক্তি হতে হবে। বিশে^ এমন কোন উদ্যোক্তা নেই যে তারা বিনা পরিশ্রমে সফল হয়েছেন। তাই আপনাকে অবশ্যই এই সব গুনাবলী গুলো অর্জন করতে হবে।
নিজেকে চ্যালেঞ্জ করুন

সফল উদ্যোক্তা হতে হলে আপনার নিজেকে নিজেই চ্যালেঞ্জ করতে হবে। আপনাকে এমন সব উপায় খোজঁ করতে হবে যেন আপনি আপনার প্রতিদ্বন্ধী উদ্যোক্তাদের থেকে নিজেকে সবার থেকে এগিয়ে রাখতে পারেন। নতুন এবং কঠিন কাজ করার জন্য নিজেকে সব সময় প্রস্তুত রাখতে হবে এবং ক্রমাগত নতুন চ্যালেঞ্জ সমূহ গ্রহন করতে হবে।
 

আবেগ প্রবণ হওয়া
সাধারণ ভাবে বলা যায় যে উৎসাহই আবেগ। যে কাজের প্রতি আপনার উৎসাহ থাকবে স্বাভাবিক ভাবে সে কাজের প্রতি আপনার আবেগও থাকবে। আপনি যে কাজটি করতে পছন্দ করেন না সে কাজটি করার কখনই চেষ্টা করবেন না। আপনি যে কাজটি করতে বেশি উৎসাহী হন সেটিকেই আপনাকে বেছে নিতে হবে। উদ্যোক্তা হিসেবে আপনাকে দীর্ঘ ঘন্টা কাজ করতে হবে।

তাই আপনাকে যে কাজের প্রতি আপনি সবচেয়ে বেশি উৎসাহী এমন কাজটিই বেছে নিতে হবে। পৃথিবীর বেশির ভাগ সফল উদ্যোক্তাই এমন সব কাজ বিছি নিয়েছেন যার প্রতি তাদের সবচেয়ে বেশি উৎসাহ রয়েছে।
 

ঝুঁকি নিন
প্রত্যেক ব্যবসায়ের সাখে ঝুঁকি কথাটি জড়িত, যা ব্যবসার একটি অংশও বটে। আর প্রত্যেক সফল উদ্যোক্তারাই জানেন যে ঝুঁকি ব্যতিত ব্যবসায় সফল হওয়া সম্ভব নয়। তাই আপনাকে অবশ্যই ঝুঁকি নিয়েই কাজ করার দক্ষতা অর্জন করতে হবে। কিভাবে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়া যায় সেই বিষয়েও আপনার ধারণা থাকতে হবে।
 

ভয় কমানো
ভয় কর্মের স্পৃহা ধ্বংস করে। যেহেতু উদ্যোক্তাদের তাদের ব্যবসার সফলতার জন্য নতুন নতুন কাজের সাথে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয় সেহেতু তাদেরকে ভয় পেলে হবে না। আর আপনি যদি সফল হতে চান তাহলে আপনাকে আত্মনির্ভরশীল হতে হবে এবং আপনাকে অবশ্যই ভয়কে জয় করে কাজে এগিয়ে যেতে হবে। আপনাকে ভয়কে হ্রাস করার উপায় গুলো জানতে হবে। কখনো আপনি ভয়ের জন্য পুরো কাজ থেকে পিছিয়ে যাবেন না। আপনাকে নিজের উপর বিশ্বাস রেখে কাজ করতে হবে। আরো পরুনঃ তরুণ উদ্যোক্তা হিসাবে সফল হওয়ার ৯টি কার্যকারী উপায়
লক্ষ্যকে দৃষ্টিগোচর করুন

প্রত্যেক ব্যবসার প্রধান লক্ষ্যই হচ্ছে সফলতা অর্জন। তাই আপনি যদি সফল উদ্যোক্তা হতে চান তাহলে আপনাকেও একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে হবে। বিশ্বের সব সফল উদ্যোক্তাদের দিকে নজর দিলে দেখা যায় যে তারা তাদের নির্দেষ্ট পরিকল্পনা বা লক্ষ্যকে স্থির করেই কাজে সফল হয়েছেন। কিভাবে আপনি আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন তার জন্য আপনাকে উপায় খুঁজতে হবে। আপনি আপনার বন্ধু বা ব্যবসায়িক অংশিদারদের সাথে কথা বলতে পারেন যারা কিনা আপনাকে আপনার লক্ষ্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিবে।


সময় ব্যয়
আপনি কি ভাবছেন যারা সফল উদ্যোক্তা তারা রাতারাতি সফল হয়েছেন, মোটেও না। তারা তাদের কাজে সফলতার জন্য অধিক সময় ব্যয় করার পর এই সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। তাই আপনি যদি সফল হতে চান তাহলে আপনাকেও অনেক সময় ব্যয় করতে হবে। আপনি তাদেরকে অনুসরণ করতে পারেন যারা বার বার বিফল হয়েও পিছিয়ে যাননি।
আর আপনার এই কাজটি করতে কয়েক দিন, কয়েক মাস বা কয়েক বছর লাগতে পারে। তাই আপনাকে ধৈর্য্য সহকারে অতিরিক্ত সময় ব্যয়ের মাধ্যমে আপনার ব্যবসায়িক কর্মকান্ডে সফল হতে হবে।

একজন সফল উদ্যোক্তা হতে হলে আগে আপনাকে জানতে হবে উদ্যোক্তা কে অথবা উদ্যোক্তা কী জিনিস? উদ্যোক্তাকে সাধারণভাবে ব্যবসায়ীও বলা যায়। কিন্তু একজন উদ্যোক্তা আর ব্যবসায়ীর মধ্যে খানিকটা পার্থক্য আছে। যেমন- একজন মুদি দোকানদার ব্যবসায়ী হলেও উদ্যোক্তা নন। তিনি একজন উদ্যোক্তা তখনই হবেন যখন তিনি মানুষের কোনো একটি সমস্যা গৎবাঁধা নিয়মে সমাধান না করে একটু ইনোভেটিভ উপায়ে সমাধান করবেন। আরও বিস্তারিতভাবে বলতে গেলে,আপনি একজন উদ্যোক্তা হতে পারবেন নীচের উপায়গুলোর মাধ্যমে।


উদ্যোক্তা হতে গেলে আপনাকে প্রথমেই যেকোন একটা সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে। হতে পারে আপনি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে কোনো সমস্যায় পড়েছেন নাকি আপনার আশেপাশের কেউ সেই সমস্যার সম্মুখীন? অথবা সেটা কোনো সামাজিক সমস্যাও হতে পারে। মোটকথা একটি সমস্যা চিহ্নিত করা এবং সেটির একটি উদ্ভাবনী সমাধান বের করা। এরপরের কাজ হলো সেই সমস্যা এবং তার উদ্ভাবনী সমাধানের একটি ব্যবসায়িক মডেল দাঁড় করা।

মোটামুটি এতটুকু হয়ে গেলেই কাজ অনেকটা শেষ হয়ে যায়। এরপর কাজটি এগিয়ে নেওয়া এবং এর একটি সফল পরিণাম দেওয়ার জন্য আপনাকে একটা টিম গঠন করতে হবে। আপনার টিমের কয়েকজন কো-ফাউন্ডার অথবা সহ-প্রতিষ্ঠাতা থাকবেন। কো-ফাউন্ডার হচ্ছেন তারা,যারা আপনার মতোই একটি সমস্যা নিয়ে ভাবেন অথবা চিন্তা করেন এবং আপনার টিমে অবশ্যই ভিন্ন ভিন্ন সেক্টরের মানুষ থাকতে হবে। যেমন: কেউ ইঞ্জিনিয়ার,কেউ মার্কেটিংয়ের আবার কেউবা সামাজিক বিজ্ঞানের। এতে করে টিমে বৈচিত্র্য আসবে।

টিম গঠন করার পর আপনাকে সমস্যা এবং তার উদ্ভাবনী সমাধান নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে। সমস্যার সমাধান হতে পারে কোনো পণ্য হতে পারে অথবা সেবা। যা-ই হোক না কেন, তার জন্য আপনাকে একটা প্রটোটাইপ বানাতে হবে প্রথমে। প্রটোটাইপ হলো আপনার সমাধানের একটা বাস্তবিক মডেল যা আপনার সমাধানকে চিত্রিত বা বর্ণনা করবে। যেমন: আপনি খাদ্যের মান নির্ণয়ের জন্য যদি একটি পণ্য বানাতে চান যা একইসঙ্গে আর্দ্রতা এবং pH নির্ণয় করবে তাহলে আগে আপনাকে তেমন একটা পণ্য তৈরি করতে হবে যা এই সমস্যাকে বর্ণনা করতে পারে। এটাই হচ্ছে প্রটোটাইপ।

প্রটোটাইপিংয়ের পর পণ্যটি বাজারে ছাড়তে হবে। তার আগে তা অন্তত ৫ জন ভোক্তার কাছ থেকে এর সম্পর্কে মতামতো জেনে নিতে হবে। এর মাধ্যমে বোঝা যাবে আপনার পণ্য বা সেবাটির মার্কেট  ভ্যালু। ভোক্তাদের মতামত পজিটিভ হলে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার প্রোডাক্ট বাজারে আসার জন্য প্রস্তুত।

মার্কেটে প্রোডাক্ট আনা এবং মার্কেটে আসার আগে প্রোডাক্টের লঞ্চ আসলে অনেক টাকার ব্যাপার। যা হয়ত একজন সাধারণ মানুষের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়।এক্ষেত্রে আমাদের সাহায্য করেন Angel Investor বা দেবদূত বিনিয়োগকারী। তিনিই মূলত টাকা বিনিয়োগ করে থাকেন একটা নির্দিষ্ট মালিকানার বিনিময়ে। সেজন্য আপনাকে জানতে হবে এরকম বিনিয়োগকারীরা আসলে কী চান, কীভাবে চান, কোন পর্যায়ে এসে তারা বিনিয়োগ করবেন, কী দেখে বিনিয়োগ করবেন?

আপনার প্রোডাক্ট লঞ্চ হয়ে যাওয়ার পর তা যখন মার্কেটে আসবে তখন আপনার টার্গেট থাকবে প্রাথমিকভাবে মার্কেটে বেশ বড় একটা পরিমাণ প্রোডাক্ট আনা। এজন্য আপনার কর্মী, পরিবেশক ইত্যাদি লাগবে,খরচ বাড়বে। ধরে নেওয়া যাক, আপনি মার্কেটে ১ লাখ প্রোডাক্ট আনবেন। সেজন্য আপনার বেশ ভাল পরিমাণ টাকার দরকার। যে বা যারা এই টাকা বিনিয়োগ করবেন, তাদের বলা হয় ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট। এই ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে টাকা এনে বিনিয়োগ করবে এবং ৫-৭ বছর পর “রিটার্ন জেনেরেট” করে টাকা ফেরত দেবে।

এগুলো ছিল উদ্যোক্তা হওয়ার প্রাথমিক কিছু ধাপ। তবে উদ্যোক্তা হতে হলে আপনার দরকার আত্ম- উৎসর্গিত মনোভাব। যে কোনো খারাপ পরিস্থিতি সামলে ওঠা ও ব্যর্থতা গ্রহণের সামর্থ্য আপনার থাকতে হবে। যে কোনো ব্যবসা পরিচালনার জন্য অভিজ্ঞতা না থাকলে আপনার উচিত কোথাও কাজ করে বা কোনো পার্টটাইম জব করে ব্যবসার খুঁটিনাটি হাতে-কলমে শেখা। এতে করে আপনার নেটওয়ার্কিং বাড়বে, যা পরবর্তীতে ক্লায়েন্ট ডেভেলপমেন্ট ও প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্টে সাহায্য করবে।


একজন উদ্যোক্তা হতে গেলে শুরুতেই আপনার দরকার একটা সমস্যা এবং এই সমস্যাটা আসে আমাদের আশপাশ থেকে। সাধারণত মানুষ যেটা করে,সে প্রথমে একটা সমাধান বের করে এবং সেটা কোন সমস্যার ক্ষেত্রে প্রযোজন্য তা বের করে। অর্থাৎ সে কাজটা আসলে উল্টোভাবে করে। আমাদের প্রথমেই উচিত সমস্যা বের করে তার একটা উদ্ভাবনী সমাধান বের করা। কখনোই প্রথমে সমাধান দেওয়া যাবে না। একজন উদ্যোক্তা হতে গেলে এই জিনিসটা অবশ্যই মনে রাখতে হবে।

আপনার সমস্যার সমাধান বা আইডিয়ার বাস্তবায়ন করার জন্য আপনাকে প্রথমেই ২টি প্রশ্নের উত্তর পেতে হবে। প্রথমটি হলো, মানুষ আসলেই চায় কি না যে সমস্যাটার সমাধান হোক এবং দ্বিতীয় প্রশ্ন হলো, অনেক বেশি পরিমাণে মানুষ চায় কী না যে সমস্যাটার সমাধান হোক। যদি দুটো প্রশ্নের উত্তরই পজিটিভ হয় তাহলে বুঝতে হবে আপনার সমাধান বা আইডিয়াটা বাস্তবে রূপ দেওয়া যাবে ।


Related Post

জনপ্রিয় পণ্য

সাম্প্রতিক পণ্য

Leave a Comment:
alibaba & Import Export expert

সি এন্ড এফ, আমদানি, আলিবাবা নিয়ে যেকোনো সমস্যায় আমাকে ফেসবুকে মেসেজ করুন

এখানে ক্লিক করুন
2017 © 2024 eibbuy. All Rights Reserved.
Developed By Fluttertune react js next js